• কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি বাবদ আয়ের থেকে বিগত তিন বছরে ৪৬৬ কোটি টাকা খরচ করছে সেবা ভোজ স্কীম চালাতে।
  • কালচারাল ট্যালেন্ট সার্চ স্কীম বিগত পাঁচ বছরে ২৭৮৮জন কে স্কলারশিপ প্রদান করছে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রক।
  • জানুয়ারি ২০২৩ থেকে  এপ্রিল ২০২৩ সময়কালে ভারতে বিদেশী পর্যটক প্রায় ৭৯শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ওই একসময় ২০১৯ সালের তুলনায়।

অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন রোগের ঝুঁকি বাড়ায় ভিটামিনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নেই

অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়
ভিটামিনের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা নেই

বছর কয়েক আগে একটি সংবাদ চমকে দিয়েছিল বিশ্ববাসীকে। যুক্তরাষ্ট্রে এফডিএ বা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে যথাযথ তথ্য না দিয়ে যুক্ত রাষ্ট্রের ভিটামিন বাজারজাত করার জন্য একটি সুইস ওষুধ কোম্পানিকে ৫শত মিলিয়ন ডলার জরিমানা করে। এ থেকে বোঝা যায় বিশ্বব্যাপী মাল্টি ভিটামিন-এর বাজার কত বড়। সারা বিশ্বে কয়েক বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন ডলারের ভিটামিন বিক্রয় হয়। আর এই মাল্টি ভিটামিন নিয়ে রিডার্স ডাইজেস্ট-এর মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে এক উদ্বেগজনক গবেষণা তথ্য সম্বলিথ দীর্ঘ নিবন্ধ। নিবন্ধে বলা হয়, আমাদের অনেকে বিভিন্ন সম্পূরক খাদ্য বিশেষ করে ভিটামিন পিল গ্রহণ করে থাকেন এই ভেবে যে ভিটামিন আমাদের রোগমুক্ত ও স্বাস্থ্যবান করে তুলবে। কিন্তু গবেষকগণ বলছেন, মাল্টি ভিটামিন রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে অথবা ক্যালরির খাটতি পূরণ করে এমন কোন তথ্য প্রমাণিত হয়নি। এমনকি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে অভবা ক্যালরির ঘাটতি পূরণ করে এমন কোনও তথ্য প্রমাণিত হয়নি। এমনকি বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, অতিরিক্ত মাত্রায় মাল্টি ভিটামিন গ্রহণের ফলে আমাদের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
স্বাস্থ্য ভালো হবে এটা ভেবে আমরা যেসব ওষুধ গ্রহন করি, সম্ভবত ভিটামিনই তার মধ্যে সর্বাধিক মাত্রার। কিন্তু গবেষকগণ জানাচ্ছেন মাল্টি ভিটামিনের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সম্পন্ন কোনওগুণ দেখা যায়নি। আর তাছাড়া পুষ্টির জন্যও এটি উপযুক্ত নয়। এককালে ডাক্তারেরা রোগীদের মাল্টি ভিটামিন নেওয়ার পরামর্শ দিতেন, এখন সেটা একটা গভীর প্রশ্নের মুখোমুখি। কারণ এটা টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয় বলে অনেকের অভিমত। উদ্বেগের বিষয়টা হল অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করার কুফল। বিশেষ কোনও ভিঠামিন অথবা খনিজ পদার্থ অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে প্রকৃতপক্ষে রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

 

 

 

 

 

 

 

 

আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী লোকেরা যখন তার প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট ভিটামিন অথবা মিনারেলের বদলে মাল্টি ভিটামিন গ্রহণ করেন, মূলত তখনই বিপত্তি ঘটে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে খাবার থেকে ভিটামিন শোষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার কারণে কিছু কিছু বয়স্ক ব্যক্তির ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আবার যেহেতু রোদে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হয় তাই যারা বাইরে কম বের হন তাদের ভিটামিন ‘ডি’-এর প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। যেসব গর্ভবতী মহিলা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করেন না তাদের শিশুদের স্নায়বিক সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
অধিকাংশ লোকের এমনকি যারা কম মাত্রার সুষম খাবার গ্রহণ করেন এবং ফল ও সবজি কম খান তাদের ক্ষেত্রেও তেমন একটা ভিটামিনের ঘাটতি দেখা যায় না। ইউএস ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বোর্ডের সদস্য এবং জন হপকিস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হিউম্যান নিউট্রিশনের ডাইরেক্টর ডাক্তার বেনজামিন ক্যাবালেরোর মতে, ‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে। বাস্তবতা হল আমাদের খুব সামান্য পরিমাণে দরকার থাকলেও আমরা অতিরিক্ত শক্তির জন্য অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ গ্রহণ করছি।’ কিছু ভিটামিন ও খনিজের ক্ষেত্রে, যেমন ভিটামিন ‘এ’-এর প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে বেশি গ্রহণ করা হলে তার ফল ভীষণ খারাপ হতে পারে ।
ভিটামিন ‘এ’ যকৃতে পাওয়া যায়। কিছু কিছু দেশে দুধে সামান্য পরিমাণে যোগ করা হয়। তাছাড়া নিউট্রিশন বার, স্বাস্থ্যকর পানীয় এবং সিরিয়ালেও কিছু পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ যোগ করা হয়। ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব আর্থ্রাইটিস অ্যান্ড মাসকিউলোস্কেলেটাল অ্যান্ড স্কিন ডিজিজ-এর ডাক্তার জন ম্যাক জোয়ান বলেন, বিভিণন প্রকারের খাবার, যেমন— সিরিয়াল ও সয়াদুধ সংরক্ষণের উপযোগী করার জন্য মাল্টি ভিটামিন যোগ করার বেলায় ভিটামিন ‘এ’ অধিক মাত্রায় হয়ে যেতে পারে। ফলে জলে দ্রবণীয় ভিটামিন যেমন ভিটামিন ‘সি’ বর্জ্য হিসাবে মুত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে পারলেও অতিরিক্ত ভিঠামিন ‘এ’শরীরে জমা হয়।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা যায়, যেসব লোকের রক্তে ভিটামিন ‘এ’ এর লেভেল খুব উচ্চ মাত্রার, তাদের অস্টেওপোসিসের ঝুঁকি রয়েছে। সাম্প্রতিক অপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে মাল্টিভিটামিনের একটি পিলে ১৫০০ মাইক্রোগ্রামের মতো উপাদান থাকে যা প্রতিদিনকার প্রস্তাবিত মাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ। আর প্রতিদিন এটা গ্রহণের ফলে অস্থিভঙ্গের ঝুঁকিও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে। এমনকি আপনি যদি প্রস্তাবিত মাত্রার ১০০ শতাংশ মেনে ওষুধ গ্রহণ করেন এবং আপনার খাদ্যে যদি পর্যান্ত পরিমানে ভিটামিন ‘এ’ এর উৎস থাকে তবে সেক্ষেত্রেও অস্টেওপোরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে বলে যাক্তার ক্যাবালেরো জানান ।
সর্বাধিক জনপ্রিয় ভিটামিন হল ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন ‘ই’। এক সময় বিজ্ঞানীরা ভেবে ছিলেন এসব ভিটামিনের ক্যানসার ও হৃদরোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ভিটামিন ‘সি’ এর কোনও সুফলের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। আর ভিটামিন ‘ই’ নিয়েও বহু গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটক প্রতিরোধ করতে এই ভিটামিন অক্ষম। যারা ভিটামিন ‘ই’ গ্রহণ করছেন তাদের অনেকেরই স্ট্রোক দেখা দিয়েছে। টাফটসের মিনারেল বায়োঅ্যাভেইলেবিলিটি ল্যাবরেটরির ডাইরেক্টর ডাক্তার রিচার্ড উড অধিক মাত্রায় আয়রণ গ্রহণ করার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অতিরিক্ত লৌহ ঘটিত খাবারও হৃদরোগীর জন্য ভয়াবহ ।
ডাক্তার ক্যাবালেরোর মতে, শরীর যে ভিটামিন অথবা খনিজের প্রয়োজন নেই মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করার ফলে সে সবের আধিক্য দেখা দিলে ভিন্ন ভিন্ন আকারের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। অপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মহিলা হৃদরোগীর ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের হার বাড়িয়ে দিতে পারে। আসলে মানুষ একটা ‘যাদু বটিকার’ দিকে তাকিয়ে। বাস্তবে যার কোনও অস্তিত্বই নেই।

Related Posts

আমরা এখন Trial-Run করছি!

শীঘ্রই আমরা Re-Launched করব আমাদের অনলাইন পোর্টাল!

আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ