• কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি বাবদ আয়ের থেকে বিগত তিন বছরে ৪৬৬ কোটি টাকা খরচ করছে সেবা ভোজ স্কীম চালাতে।
  • কালচারাল ট্যালেন্ট সার্চ স্কীম বিগত পাঁচ বছরে ২৭৮৮জন কে স্কলারশিপ প্রদান করছে কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক মন্ত্রক।
  • জানুয়ারি ২০২৩ থেকে  এপ্রিল ২০২৩ সময়কালে ভারতে বিদেশী পর্যটক প্রায় ৭৯শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ওই একসময় ২০১৯ সালের তুলনায়।

ভ্রমণ সাথী

বিদেশ : বাংলা দেশের হৃদয় হতে পাহাড়

মহঃ সমিরুদ্দিন

হাত বাড়ালেই বিদেশ। হ্যাঁ, আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। উৎসবের মাস গুলোতে একটু বেশি ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে আসতে পারেন এই প্রতিবেশী দেশটির কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র। বিশেষ প্রতিবেদন থাকছে ‘পাহাড় ভ্রমণ’। দেশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকার উপর ভ্রমণের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনা করা হলো।


রাঙ্গামাটি : কাপ্তাই লেকের বুকে জেগে থাকা ছোট্ট একটি শহর রাঙ্গামাটি। এ শহরের পরতে পরতে রয়েছে বৈচিত্র্যের ভান্ডার। লেকের বাঁকে বাঁকে পেচানো এই শহর থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেন এই সময়ে। শরতের স্নিগ্ধ আকাশ, স্বচ্ছ জলের লেকের ঝিরিঝিরি বাতাসে নৌকা ভ্রমণ, পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দূর পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে এক্ষুণি বেড়িয়ে পড়ার জন্য তৈরি হোন। রাঙ্গামাটি প্রকৃতির লীলায়িত নন্দন কানন। যার পূর্বের নাম কার্পাস মহল। তার পরে নিউ রাঙ্গামাটি, কালের প্রবাহে এখন রাঙ্গামাটি। বাংলাদেশের ৬,১১৬.১৩ বর্গ কি.মি. এলাকা নিয়ে গঠিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ-ভূখণ্ড এই পূর্বে ভারতের মিজোরাম ও ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে বান্দরবন পার্বত্য জেলা এবং পশ্চিমে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ও চট্টগ্রাম জেলা। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বর্ণময় নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠি এবং তাদের সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্য মন্ডিত সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের জন্য রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সবসময় আকর্ষণ করে।
উপজাতীয় জাদুঘরঃ প্রথমেই যেতে পারেন উপজাতীয় জাদুঘরে। যে কোন ট্যাক্সিওয়ালাকে বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে জাদুঘরের দুয়ারে। এখানে উপভোগ করতে পারবেন রাঙ্গামাটি-সহ পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত নানান উপজাতির জীবনাচরণ এবং নানা ধরনের তথ্য। ছোট অথচ অত্যন্ত সমৃদ্ধ এ জাদুঘরটি খোলা থাকে সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৯.৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪.৩০ মিনিট পর্যন্ত। শনি, রবি ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে জাদুঘর বন্ধ থাকে। জাদুঘরে প্রবেশেও বড়দের জন্য পাঁচ টাকা এবং ছোটদের জন্য দুই টাকার টিকিট কিনতে
হবে।
রাজবন বিহার : এ জায়গা থেকে সরাসরি চলে যান রাঙ্গামাটি শহরের রাজবন বিহারে। এ অঞ্চলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তীর্থস্থান এই রাজবন সার্কেলের প্রশাসনিক দপ্তর। বিহার। এখানে আছে একটি প্রার্থনালয়, একটি প্যাগোডা, বনভান্তের (বৌদ্ধ ভিক্ষু) আবাসস্থল ও বনভান্তের ভোজনালয়। প্রতি শুক্রবার ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এখানে চলে প্রার্থনা। রাজবন বিহারে দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারেন কাপ্তাই লেকের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
রাজবাড়ি : রাজবন বিহারের পাশেই কাপ্তাই লেকের একটি দ্বীপ জুড়ে চাকমা রাজার রাজবাড়ি। নৌকা দিয়ে এই রাজবাড়িতে যেতে পারেন পাঁচ টাকা দিয়ে। অনেক উপজাতিদের মধ্যে এখনো চালু রয়েছে রাজ প্রথা। বর্তমানে চাকমা সার্কেলের রাজ্য ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। আঁকা বাঁকা সিঁড়ি ভেঙ্গে উপরে উঠে গাছের ছায়ায় হাট বাঁধানের পথের মাথায় এ বাড়িটি দেখে ভালো লাগবে আপনার । এখানে আরও দেখতে পাবেন চাকমা সার্কেলের প্রশাসনিক দপ্তর।
রিজার্ভ বাজার : এবার নৌকা দিয়ে লেক পাড় হয়ে ট্যাক্সিতে করে চলে আসুন রিজার্ভ বাজারে। ঘুরে ফিরে দেখুন রাঙ্গামাটির ব্যস্ততম এই জায়গাটি। রিজার্ভ বাজার থেকে রাঙ্গামাটির বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার লঞ্চ ছাড়ে। রিজার্ভ বাজার ঘুরে এবার নিশ্চয়ই ক্ষুধার্ত। খেয়ে নিন এখানকার কোন রেস্তোরাঁয়। রিজার্ভ বাজার থেকে এবার চলুন পর্যটন কমপ্লেক্স।


পর্যটন কমপ্লেক্স ও ঝুলন্ত সেতু : পুরো রাঙ্গামাটি শহরের সব জায়গাতে লোকাল ট্যাক্সি চললেও এখানে যেতে হবে রিজার্ভ নিয়ে। ভাড়া ১০০- ১৫০ টাকা। তবে লোকাল টেক্সিতে চড়ে তলবছড়ি বাজারে এসে সেখান থেকে পায়ে হেঁটেও পর্যটন কমপ্লেক্সে আসতে পারেন। তবলছড়ি বাজার থেকে এখানকার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার। রাস্তার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এই অল্প পথ নিমেষেই ফুরিয়ে যাবে। একেবারে হাঁটতে মন না চাইলে এখান থেকে রিজার্ভ ট্যাক্সি নিতে পারেন ৭০-৯০ টাকায়। রাঙ্গামাটির কথা ভাবলে প্রথমে কল্পলোকে যে ছবিটি সবার আগে ভেসে উঠে সেটি হলো পাহাড়ের কোলে রঙ্গিন একটি ঝুলন্ত সেতু। হ্যাঁ পর্যটন কমপ্লেক্সের ভেতরেই রয়েছে সুন্দর এই ঝুলন্ত সেতুটি। পাঁচ টাকায় টিকিট কিনে এখানে ঢুকে পড়ুন। ঝুলন্ত সেতু ধরে যতোই সামনে এগোবেন ততোই ছবির মতো দৃশ্য আপনার দু’চোখকে হাতছানি দেবে। ইচ্ছে হবে কাপ্তাই লেকের ভেতরে দূর পাহাড়ি কোন দ্বীপে চির দিনের জন্য থেকে যেতে। সেতু পেরিয়ে সামনের পাহাড়ে উঠে ইচ্ছে মতো ঘুরতে পারেন। এখানে থাকতে পারবেন সন্ধ্যা অবধি । পাহাড়ে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে গেলে কাপ্তাই লেকে নৌ ভ্রমণ করতে পারেন। নৌ ভ্রমণের জন্য এখানেই পেয়ে যাবেন নানা রকমের নৌকা। দশ জনের চড়ার মতো ইঞ্জিন নৌকা প্রতি ঘন্টার জন্য ভাড়া ৫০০ টাকা, ১৫-২০ জনের নৌকা প্রতি ঘন্টা ৭০০ টাকা, স্পীড বোট প্রতি ঘন্টার জন্য ১২০০ টাকা আর আধ ঘন্টার জন্য ৬৫০ টাকা। এখান থেকে ইঞ্জিন নোকায় চড়ে যেতে পারেন প্যাদা টিং টিং কিংবা শুভলং।। রিজার্ভ বাজার থেকে ভাড়া নিলে শুভলং যাওয়া আসার জন্য ইঞ্জিন নৌকা পাবেন ১২০০ টাকায়। এছাড়া রাঙ্গামাটি থেকে কেয়ারীর কর্ণফুলী নামের একটি ক্রুজবোট চালু রয়েছে ভাড়া জন প্রতি ২০০ টাকা।
কীভাবে যাবেন : ঢাকার কলাবাগান, ফকিরাপুল ও কমলাপুর থেকে সরসরি রাঙ্গামাটির উদ্দেশে ছেড়ে যায় ডলফিন, এস আলম ও চ্যালেঞ্জার পরিবহনের বাস। ভাড়া জনপ্রতি ৩০০/৩৫০ টাকা । চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেস এবং বদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতি ২০ মিনিট পর পর রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বিরতিহীন বাস। ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। এছাড়া ট্রেন কিংবা বিমানেও ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া যায়। বিমান বাংলাদেশ, জিএমজি ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে।
কোথায় থাকবেন ঃ রাঙ্গামাটি শহরে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো হোটেল হল হোটেল সুফিয়া এবং পর্যটন মোটেল। সুফিয়ার সাধারণ সিঙ্গেল রুম ৪৫০ টাকা, সাধারণ ডবল রুম ৮০০ টাকা, ডবল ডিলাক্স এসি রুম ১২৫০ টাকা, সুইট রুম ১৭০০-২৩০০ টাকা। হোটেল সুফিয়া রাঙ্গামাটি শহরের কাঠালতলীতে। ফোন-০৩৫১-৬২১৪৫, ৬১১৭৪। ঢাকা থেকেও বুকিং দিতে পারেন এ হোটেলের। যোগাযোগ-এম আর সেন্টার (৭ম তলা) বাড়ি ৪৯, সড়ক-১৭, বনানী বা/এ, ঢাকা। ফোন ৮৮২৬৭৫৯, ০১৮১৯২২৪৫৯৩। পর্যটন মোটেলে রুম ভাড়া প্রতিদিনের জন্য নন-এসি ৯০০ টাকা, এসি-১৯০০ টাকা। ফোন-৬৩১২৬। ঢাকা থেকে এ হোটেলেও বুকিং দিতে পারেন। যোগাযোগ – বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, ফোন-
98937৭১০-৮৮১১১০৯, এক্স-১৪৩। এছাড়াও রাঙ্গামাটির সাধারণ মানের কয়েকটি হোটেল হলো পাথর ঘাটায় হোটেল গ্রীন ক্যাসেল, ফোন-৬৩২৮২, রিজার্ভ বাজারে হোটেল লেক ভিউ, . ফোন-৬৩৩৭৩, কোর্ট বিল্ডিং বনরূপা এলাকায় হোটেল শাপলা, ফোন-৬৩৩৯৬। রাঙ্গামাটি শহরের এনডব্লিউডি কোড নঃ-০৩৫১।
আরও যা জানা দরকার : বাংলাদেশের একমাত্র রিক্সা মুক্ত শহর রাঙ্গামাটি। তাই এই শহরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হয় লোকাল ট্যাক্সিতে। এক স্টপেজ থেকে আরেক স্টপেজে পৌরসভা নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়া হলো ১০ টাকা। এছাড়া রিজার্ভ নিলে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভাড়া ১৮০- ২০০ টাকা।


বান্দরবান : পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম একটি জেলা বান্দরবান। সাংগু নদীর তীরে পাহাড়ের ঢালে ঢালে এ শহরের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। এ জেলার শহরের সৌন্দর্য অবর্ণনীয়। এ জেলার সর্বত্রই রয়েছে বেড়ানোর মতো অসংখ্য জায়গা। এবারে থাকছে বান্দরবানে বেড়ানোর জায়গাগুলোর খোঁজ-খবর।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্ৰ : বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে বান্দরবান চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশেই রয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। এখানে আছে একটি কৃত্রিম লেক। লেকের এপার থেকে ওপারে যেতে পারেন ঝুলন্ত ব্রীজ পেরিয়ে। ইচ্ছে হলে লেকের ভেতরে স্পীড বোট নিয়ে ঘুরতেও পারেন। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে জনপ্রতি দশ টাকার টিকিট কিনতে হয়।
সাংগু নদী : বান্দরবানে বেড়াতে গেলে সাংগু নদীতে নৌ ভ্রমণ করতে ভুলবেন না। এত স্বচ্ছ জলের নদী এদেশে খুবই বিরল। তাছাড়া এর দু’ কিনারে রয়েছে নানান বৈচিত্র্য। শহরের সাংগু ব্রিজের নিচ থেকে নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। প্রতি ঘন্টা ঘুরতে লাগবে ৫০-৮০ টাকা।
বুদ্ধ জাদি : শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে জাদির পাহাড়ে রয়েছে একটি আকর্ষণীয় স্বর্ণ মন্দির। রিক্সায় কিংবা ট্যাক্সিতে চড়ে যেতে পারেন এখানে। পাহাড় বেয়ে বেয়ে এখানকার মন্দিরটিতে উঠলে দেখতে পাবেন বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বগা লেকে যেতে হবে রুমা বাজার থেকে। নানান কার্যক্রম।
শৈল প্রপাত : বান্দরবান শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে রয়েছে শৈল প্রপাত। চারদিকে পাথর সমেত বিরাট জায়গা জুড়ে এখানে রয়েছে স্বচ্ছ জলের ঝরণা। ঝরণা দেখে একটু সময় করে পাশের ত্রিপুরা পল্লী থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
চিম্বুক পাহাড় : বান্দরমান বান্দরমান শহর থেকে প্রায় ২৫ কিমি. দূরে রয়েছে চিম্বুক পাহাড়। এই পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় চোখের সামনে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দেখা যায় একেবারে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। শহর থেকে চাঁদের গাড়িতে করে যেতে এখানে ভাড়া লাগে ৭০-৮০ টাকা ।
রুমা বাজার : বান্দরবান শহর থেকে প্রতিদিন সকালে দু’টি চাঁদের গাড়ি ছাড়ে রুমার উদ্দেশে। যেতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘন্টা। ভাড়া জনপ্রতি ৮০-১০০ টাকা। চাঁদের গাড়ি থেকে রুমা ঘাটে নেমে সেখান থেকে রুমা বাজারে আসতে হবে নৌকায়। রুমা বান্দরবানের একটি থানা শহর। এখানকার চারিদিকের প্রকৃতি আপনার হৃদয় পাগল করবে। এখানে গেলে দেখতে পাবেন বম উপজাতিদের জীবনাচরণ।
বগা লেক : বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে যে লেক তার নামই বগা লেক। বগা লেকে যেতে হবে রুমা বাজার থেকে। বৃষ্টি না থাকলে এখানে যেতে মাঝে মধ্যে জীপ পাওয়া যায়। অন্যথায় একমাত্র উপায় পায়ে হাঁটা। পায়ে হেঁটে গেলে একটু কষ্ট হলেও দেখা যায় অনেক কিছু। আর হেঁটে গেলে লাগবে প্রায় চার ঘন্টা। এখানে রাতেও থাকতে পারেন। থাকার জন্য আছে ইয়ং বম এসোসিয়েশনের রেস্ট হাউজ। আর এখানে থাকতে জনপ্রতি লাগবে ৭০- ১০০ টাকা । বগা লেক থেকে কেওক্রাডং বেশি দূরে নয়। প্রস্তুতি থাকলে দেখে খুব বেশি দূরে নয়। প্রস্তুতি থাকলে দেখে। আসতে পারেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়াকে ।


কোথায় থাকবেন : বান্দরবানে থাকার জন্য ভালে হোটেল হলো হোটেল প্লাজা বান্দরবান, ফোন-৬৩২৫২ এবং পর্যটন মোটেল, ফোন-৬২৭৪১, ৬২৭৪২, ভাড়া নন-এসি ৮৫০ ও এসি ১৫০০ টাকা এবং ডিলাক্স ২২৫০ টাকা । এছাড়া অন্যান্য সাধারণ মানের হোটেল হলো প্রেসক্লাব ভবনে হোটেল গ্রীন হিল, ফোন-৬২৩৭৪, হোটেল পূরবী, ফোন-৬২৫৩১। হোটেল অতিথি, ফোন-৬২৫৩৫। বান্দরবানের এন ডব্লিউডি কোড-০৩৬১।
কীভাবে যাবেন ঃ ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান যায় এস আলম, সীদিয়া এবং ডলফিন পরিবহনের বাস। এস আলম ছাড়ে ফকিরাপুল থেকে, সোদিয়া ছাড়ে গাবতি ও কলাবাগান থেকে এবং ডলফিন ছাড়ে কলাবাগান থেকে। ভাড়া ৩৫০ টাকা। এছাড়া সড়ক, রেল কিংবা বিমান যে কোনও পথে চট্টগ্রাম এসে সেখান থেকেও সহজেই যেতে পারেন বান্দরবান। চট্টগ্রাম শহরের বদ্দারহাট হতে সকাল ছয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস চলাচল করে। ভাড়া ৮০-১০০ টাকা।
খাগড়াছড়িঃ তিন পার্বত্য জেলার আরেকটি হলো খাগড়াছাড়িতে। পাহাড়ের ঢালে ঢালে শুধুই বনাঞ্চল আর বনাঞ্চল এখানে। খাগড়াছড়িতে এসে প্রথমে যেতে পারেন দীঘিনালা ও পানছড়ি বাজারে। এজায়গা দু’টির সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। সবুজ বন আর পাহাড়ের আলিঙ্গন যেন এ জায়গা দুটোতে।
রামগড়ঃ খাগড়াছড়ি দেখে এবার রামগড়ে চলে আসুন। খাগড়াছড়ি থেকে এখানে যাবেন বাসে। রাত যাপন করার জন্য ডাক বাংলো রয়েছে। রামগড়ে দেখবেন ফেনী নদী। এর ওপারে ত্রিপুরা রাজ্য। রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি খুব পুরোনো। এটি দেখে নিন। ১৯২০-এর বাগাইছড়ি, মহালছড়ি, দীঘিনালা ও রামগড় থানাকে নিয়ে গঠিত হয় বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার দ্বিতীয় মহকুমা এই রামগড়। রামগড়ের বনাঞ্চলে গেলে বিচিত্র বর্ণের পাখিও দেখতে পাবেন। এছাড়া বানর, শূকর এবং নাম না জানা প্রাণীর দেখা মিলতে পারে। সুনীল সুন্দর পাহাড়ের গায়ে উপজাতিদের বাড়িঘর দেখে আরো মুগ্ধ হবেন।
মানিকছড়িঃ রামগড় থেকে ২৭ মাইল দূরে মানিকছড়ি। বাসে যেতে দেড় ঘন্টা সময় লাগবে। রাত যাপন করার জন্য আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থা রয়েছে। মানিকছড়ি নেমে মনে হবে কোন এক আলাদা রাজ্যে এসেছেন। এটি মং প্রধানের রাজধানী। মানিকছড়িতে আপনি প্রথম দেখুন রাজার বাড়িটি। এখানে হাতির দাঁত দ্বারা তৈরি খাটটি দেখে মুগ্ধ হবেন। মানিকছড়িতে আরো পাহাড়ি এলাকার আকর্ষণীয় দৃশ্য রয়েছে। মানিকছড়ির পাশে রয়েছে। একটি ছবি অর্থাৎ নালা। জায়গাটি ঘুরে-ফিরে দেখার সময় জানবেন, একদা এখানে মানিক পাওয়া গিয়েছিল বলে পরবর্তীতে এর নাম হয় মানিক ছড়ি। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে রাজ দরবারে গীত-নৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।


গুইমারাঃ রামগড় থেকে গুইমারা ১৮ মাইল দূরে। বাসে যাবেন। সময় লাগবে দেড় ঘন্টা। গুইমারায় দেখবেন অরণ্য, বিল, পাহাড়। এখানে সর্বত্রই নৈসর্গিক দৃশ্য, তা মনকে কেড়ে নেয়ার মতো। পাহাড়ের কাছে গেলে দেখবেন ঝর্ণা। গুই মারা বনাঞ্চলে বাস করে বাঘ, হরিণ, শূকর, ভাল্লুক, হাতিসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী।
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার জন্য আছে এস অলম, সৌদিয়া ও ডলফিন পরিবহনের সরাসরি রাস সার্ভিস। বাসগুলো ছাড়ে কলাবাগান ও কমলাপুর থেকে। ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা। এছাড়া যে কোন বাহনে চট্টগ্রাম এসে সেখান থেকেও সহজেই যেতে পারেন খাগড়াছড়ি।
কোথায় থাকবেন : খাগড়াছড়িতে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পর্যটন মোটেলের। এঝাড়া এখানে থাকার জন্য আরো বেশি কিছু হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলের ভাড়া ১০৫০-৩০০০ টাকা।
সীতাকুন্ড পাহাড়ঃ সীতাকুন্ড হিন্দুদের একটি বড় তীর্থক্ষেত্র। চট্টগ্রাম শহর থেকে ৪০ কিমি. উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেরর পাশে ঐতিহাসিক সীতাকুন্ড পাহাড় অবস্থিত। ঐতিহাসিকদের মতে বনবাসকালে শ্রীরামচন্দ্রে স্ত্রী সীতাদেবী ও ভাই লক্ষণকে নিয়ে রামচন্দ্র এখানে অবস্থান করেন। এখানে তাই গড়ে উঠেছিল অবস্থান করেন। এখানে তাই গড়ে উঠেছিল শম্ভুনাথ মন্দির, রামকৃষ্ণ, সীতাকুন্ড ও লক্ষণকুন্ড নামের মন্দির। চন্দ্রনাথ মন্দিরই মূলত হিন্দুদের প্রধান তীর্থস্থান। এছাড়া বৌদ্ধ বিহার, ভোলানন্দগিরি আশ্রম ও ৫ এখানে আরো আছে আউলিয়ার দরগাহ, কিমি. দূরে একটি গরম জলের ফোয়ারা আছে। চট্টগ্রামের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে রেলস্টেশন, বন্দর এলাকা, মেরিন একাডেমী, ফৌজদারহাট ক্যাডেট পর্যটন করপোরেশনের মোটেল, বড় কলেজ, পর্তুগীজ অস্ত্রাগার, বাংলাদেশ বাজারসহ নানা বিনোদন পার্ক ও এমিউজমেন্ট পার্ক। সময় করে ঘুরে আসতে পারেন সপরিবারে।
কিভাবে যাবেন : প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা : থেকে রেলপথ, সড়কপথ, জলপথ ও আকাশপথে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়। স্থলপথে প্রতিদিনই ছেড়ে যায় এসি ও নন-এসি বিলাসবহুল’ সকল বাস। ঢাকার ফকিরাপুল, রাজারবাগ, কমলাপুর থেকে এসব বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। ভাড়া ৩০০-৬০০ টাকা। বিমানের ভাড়া ৩৪০০ টাকা। যোগাযোগ – বাংলাদেশ বিমান, বিমান ভবন, হযরত শাহজালাল আন্ত- র্জাতিক বিমানবন্দর, ফোন-৯৫৩০১৫১, ৮৯১৭৪০০-৫৫ (বলাকা)। জিএমতজি এয়ার লাইন্স, এবিসি হাউজ, ৮ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী। ফোন- ৮৮২৫৮৪৫-১। সড়ক ও রেলপথে যেতে যোগাযোগের নম্বর, গ্রীন লাইন, ফোন- ৯৩৩৯৬২৩। সোহাগ পরিবহন প্রাঃলিঃ, ফোন-৮৩১৬৭৬6,9334152। নেপচুন, ফোন-৭১০১৯৫১। সৌদিয়া এস আলম, ফোন- ০১১৯৭০১৫৬৩৬, সিল্ক লাইন, ফোন-৭১৯৪৪৬১। বাংলাদেশ রেলওয়ে, ফোন- ৯৩৫৮৬৩৪, ৮৩১৫৮৫৭।
কোথায় থাকবেন : চট্টগ্রাম থাকার জন্য রয়েছে নানা মানের হোটেল। এসব হোটেল ছাড়াও রয়েছে পাঁচ তারকা মানের বিলাসবহুল হোটেল। ভাড়া পড়বে ৫০০-৭০০০ টাকা।
ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি
ট্রেন চলাচলের দিন : রবিবার ও মঙ্গলবার
ছাড়ার সময় :
কলকাতা থেকে সকাল ৭.১০ মি.
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে সকাল ৮.১৫ মি.
পৌঁছানোর সময় : কলকাতায় রাত ৯.৩০ মি.
ঢাকার রাত ৭.৩০ মি.
অনুসন্ধান : ৮৩১৫৮৫৭
বুকিং : ৯৩৫৮৬৩৪
নিয়ন্ত্রন কক্ষ : ৯৩৫৮৫৭৬
সিলেট অনুসন্ধান : ০৮২১-৭১৩০৬১
চট্টগ্রাম অনুসন্ধান : ০৩১-৬৩৫১২৬
খুলনা অনুসন্ধান : ০৪১-৭২১৯০১
রাজশাহী অনুসন্ধান : ০৭২১-৭৭৪০৪৩

Related Posts

আমরা এখন Trial-Run করছি!

শীঘ্রই আমরা Re-Launched করব আমাদের অনলাইন পোর্টাল!

আপনার আগ্রহের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ